কোলাহলে ভরা ব্যস্ত শহরকে অনেকটা নিমেষের মাঝেই শান্ত আর নীরব করে তুলেছে সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়। একই সঙ্গে করে তুলেছে প্রতিবন্ধকতাপূর্ণও। জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলার এ প্রয়াস যেন প্রকৃতির এক নিঠুর খেলা। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রায়ই বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে। এবার পড়ল সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের কবলে।
ঘূর্ণিঝড়ের এই নামটি রাখার দায়িত্বে ছিল থাইল্যান্ড। ভিয়েতনামিজ ভাষায় এর অর্থ ‘পাতা’। বঙ্গোপসাগর থেকে ঘনীভূত হয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলে এই ঘূর্ণিঝড়। সমুদ্র উপকূলের ১৫টি জেলাকে তছনছ করে তার আশপাশের জেলা,
উপজেলা এমনকি বিভাগকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে সিত্রাং। দীর্ঘ টানা বর্ষণে জনজীবনে চলে এসেছে ঢিলেঢালা ভাব। সঙ্গে শীতের আমেজও। অনেকে হারিয়েছে নিজের আবাস্থল, কেউ হারিয়েছে তার স্বজন, পরিজনকে।
এদিকে টানা বর্ষণে রাস্তার বিভিন্ন পথে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। আশপাশে ধরাছোঁয়ার মধ্যে নেই কোনো যান। বাস, রিকশা সবই যেন হঠাৎ করে উধাও হয়ে চিরচেনা রাস্তার দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে সিত্রাং। শুধু পানি আর উপড়ে যাওয়া গাছ ছাড়া এখন যেন কিছুই চোখে পড়ে না রাস্তায়।
এমন বৈরি পরিস্থিতিতে অফিসগামী কর্মী আর শিক্ষার্থীরাও পড়েছে ভোগান্তিকে। যানবাহনের অভাব আর কোমর পর্যন্ত পানির কারণে সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো এখন যুদ্ধজয়ের মতো।
বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা তৈরি করছে বিশুদ্ধ পানির সংকট, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ, আর মশার উপদ্রব।
তীব্র গতির তাণ্ডবে শুধু গাছ নয়, উপড়ে গেছে বিদুত্যের খুঁটিও। বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে, প্রকৃতি তার অবাদ্ধ সন্তানকে নিমিষেই শাসন করে মুহূর্তেই করে দিয়েছে নীরব, নিস্তব্ধ।